April 29, 2024, 10:31 pm

সংবাদ শিরোনাম
সারাদেশের মতো রংপুরের বাজার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ভোক্তার ডিজি আবাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হাফেজ ও এতিমদের মাঝে পোশাক ও সেলামী প্রদান কক্সবাজার টিসিবির পণ্য মজুদ ও বিক্রির অপরাধে এক লাখ টাকা জরিমানা দুস্থদের মাঝে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ এবার কলাপাড়ায় দেখা মিললো বিলুপ্তপ্রায় উড়ন্ত লাউডগা সাপের কুড়িগ্রামের উলিপুরে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিলেন প্রভাবশালী কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ পুলিশ মেধাবৃত্তি- ২০২২ প্রদান নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ে পণ্যের দাম কমছে :রংপুরে ভোক্তা ডিজি ব্রহ্মপুত্র নদে আড়াই মাস ধরে চিলমারী-রৌমারী ফেরি চলাচল বন্ধ বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

সাড়ে ১৩শ’ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি মোবাইল কোম্পানিসহ ১০ প্রতিষ্ঠানের

সাড়ে ১৩শ’ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি মোবাইল কোম্পানিসহ ১০ প্রতিষ্ঠানের

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

বিশাল অঙ্কের ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে ১০ বড় কোম্পানির বিরুদ্ধে। এর মধ্যে মোবাইল ফোন সেবাদান কোম্পানি রবি’র বিরুদ্ধেই ৯৩২ কোটি টাকা ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে ভ্যাট বিভাগ। এই অর্থ পরিশোধের জন্য রবিবার প্রতিষ্ঠানটির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির (বিটিসিএল) ফাঁকি উদ্ঘাটন হয়েছে ৩৭৯ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিট বা এলটিইউ-ভ্যাট বিভাগের সাম্প্রতিক গোয়েন্দা কার্যক্রম ও বিশেষায়িত নিরীক্ষায় এসব ফাঁকি বের হয়েছে। ফাঁকির অভিযোগের তালিকায় রয়েছে মোবাইল ফোন কোম্পানি গ্রামীণ ফোন ও বাংলালিংক। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড ডেইরি প্রোডাক্টস লিমিটেড, মীর কনক্রিট প্রোডাক্টস, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস, প্রিমিয়ার ব্যাংক, মদিনা সিমেন্ট ও এম আই সিমেন্টও রয়েছে তালিকায়। প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানের কাছেই ফাঁকির অর্থ পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধও জানানো হয়েছে।

এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, বড় কোম্পানির আয়কর ও ভ্যাট ফাঁকি ধরতে সম্প্রতি গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে আকস্মিক অভিযান শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে বিশেষায়িত নিরীক্ষাও। এর ফলেই এসব ফাঁকি উদ্ঘাটন হয়েছে। এলটিইউ-ভ্যাট অফিস সূত্র জানিয়েছে, কারিগরি, তথ্য-প্রযুক্তিজ্ঞানে অভিজ্ঞ ও আইনগত বিষয়ে পারদর্শী এনবিআরের অপেক্ষাকৃত চৌকস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে এলটিইউ-ভ্যাট অফিস। বিশেষায়িত নিরীক্ষার অংশ হিসেবে, প্রতিষ্ঠানের আমদানির তথ্য যাচাই, ব্যাংক হিসাব বিবরণী, ডিলারের সঙ্গে লেনদেনের তথ্য যাচাই, কোন দরে বিক্রি হচ্ছে আর কোন দরে ভ্যাট অফিসকে দেখানো হচ্ছে, কাঁচামাল কোথা থেকে আসে কিংবা যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ হচ্ছে কিনা- এসবের সঙ্গে এনবিআরের প্রতিমাসে দাখিল হওয়া রিটার্নের তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়। কিছু ক্ষেত্রে আকস্মিক উপস্থিত হয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছে রক্ষিত কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হয়।

নিরীক্ষা তদন্ত কার্যক্রমের মঙ্গে যুক্ত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ইত্তেফাককে বলেন, আগামীতে এ ধরনের অভিযান আরো পরিচালনা করা হবে। এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের ফাঁকিও বের হয়ে আসবে বলে আশা করছেন তারা।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর বড় অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি ধরা পড়ছে। এর মধ্যে মোবাইল ফোন কোম্পানির ফাঁকি আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে। বিশেষত মোবাইলের সিম বদলের আড়ালে নতুন সিম বিক্রির মাধ্যমে চারটি মোবাইল ফোন কোম্পানির দুই হাজার কোটি টাকার বেশি ফাঁকির অভিযোগ বহুল আলোচিত। এর বাইরে আরো নানা উপায়ে মোবাইল ফোন কোম্পানির ভ্যাট ফাঁকির বেশ কিছু তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় বিশাল অঙ্কের আয়কর ফাঁকির অভিযোগও রয়েছে।

 

৯২৪ কোটি টাকা পরিশোধে রবি’র কাছে চিঠি

মোবাইল ফোন কোম্পানি রবি’র কাছে রবিবার এলটিইউ-ভ্যাট বিভাগ থেকে ৯২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা পরিশোধ ও জবাব দেওয়ার জন্য আলাদা পাঁচটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব চিঠিতে কোম্পানিটির ফাঁকির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে একটি চিঠিতে কোম্পানিটির কাছে ৭১২ কোটি টাকা দাবি করা হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬’র ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট প্রদান সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম পরীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ৩ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু পরিশোধ করা হয়েছে ২ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৫৫৪ কোটি টাকার ভ্যাট কম দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে রক্ষিত তথ্যভা-ার থেকে পাওয়া তথ্যে ১৫৮ কোটি টাকার উৎসে ভ্যাট ফাঁকির তথ্যও বের হয়ে আসে। আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটি সরকারকে প্রদেয় ভ্যাট ৫৫৩ কোটি টাকার স্থলে ৩৯৫ কোটি টাকা দিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে ওই অর্থ পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠানো হয়। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কোন বক্তব্য থাকলে তা আগামি ১৫ দিনের মধ্যে জানানোর জন্যও বলা হয়। এ ছাড়া অবৈধভাবে রেয়াত নেওয়া ১১৬ কোটি টাকাও পরিশোধের জন্য আলাদা একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে এয়ারটেলের সঙ্গে একীভূত (মার্জ) হওয়া এবং তরঙ্গ বরাদ্দের অর্থের (স্পেকট্রাম চার্জ) উপর প্রযোজ্য ভ্যাটের ৯১ কোটি টাকা ও ইন্টারকানেকশন চার্জের উপর প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ দুইটি আলাদা চিঠিতে ৫ কোটি ২২ লাখ টাকাও দাবি করা হয়।

বিটিসিএলসহ ১০ প্রতিষ্ঠানের কাছে ৪১৮ কোটি টাকা

বিটিসিএলের বিরুদ্ধেও বড় অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ এসেছে। ভ্যাট ও উৎসে ভ্যাট বাবদ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৩৭৯ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই অর্থ পরিশোধের জন্য চিঠিও পাঠানো হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে গ্রামীণ ফোন ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা, রবি ৭ কোটি ৫৮ লাখ, বাংলা লিংক ৮ কোটি ৩৫ লাখ, নিউজিল্যান্ড ডেইরি ৫ কোটি, মীর কনক্রিট প্রোডাক্টস ১১ লাখ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস ৮০ হাজার, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৬ কোটি ৮৯ লাখ, মদিনা সিমেন্ ১ কোটি ৩২ লাখ এবং এমআই সিমেন্ট ২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে দাবিনামা জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠিও পাঠানো হয়।

Facebook Comments Box
Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর